মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০২:২০ পূর্বাহ্ন

দ. কোরিয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্টের পর তার স্ত্রী আটক 

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হিই। ছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের পর এবার গ্রেফতার হলেন তার স্ত্রী (সাবেক ফার্স্ট লেডি) কিম কেওন হিই। তার বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দেশটির আদালত তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শেয়ারবাজার জালিয়াতি, ঘুষ গ্রহণ এবং ক্ষমতার অবৈধ প্রভাবের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় জড়িত রয়েছে ব্যবসার প্রতাপশালী ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার দালাল। কিমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড হতে পারে।

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ফরাসি অলংকার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভ্যান ক্লিফের গড়া একটি গলার হার অধিকারে থাকা। প্রায় ৪৩ হাজার মার্কিন ডলার বা ৫০ লাখ টাকার বেশি ওই গয়না ২০২২ সালে স্বামী ও সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ন্যাটো সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময় তাকে একটি দামী গলার হার পরা অবস্থায় দেখা যায়। অভিযোগের নথিতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রীর আর্থিক বিবরণীতে ওই অলঙ্কারের কোনও উল্লেখ ছিল না।

একই ধারায় কিমের বিরুদ্ধে বিলাসবহুল ফরাসি ফ্যাশন হাউজ শ্যানেলের দুটি ব্যাগ কেনার বিষয়েও অভিযোগ আনা হয়, যেগুলোর মূল্য প্রায় ১৪ হাজার ডলার।

তার বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে, যেখানে একটি হীরার নেকলেসের বিনিময়ে সাবেক ফার্স্ট লেডি ধর্মভিত্তিক একটি গোষ্ঠীকে তাদের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদান করেছিলেন।

প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে কিমের আটকাদেশ চাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, মুক্ত থাকলে আলামত ধ্বংস ও তদন্তে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারেন সাবেক ফার্স্ট লেডি। দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, প্রসিকিউটরের যুক্তি মেনে নিয়ে আদালতের পক্ষ থেকে কিমের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়।

মঙ্গলবার আদালতে প্রবেশের পূর্বে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি কিম। শুনানি শেষে রাজধানী সিউলের একটি ডিটেনশন সেন্টারে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

গতকালের শুনানিতে কিমের আইনজীবী তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন কিমের আইনজীবীরা।

এদিকে, বিচারাধীন রয়েছে কিমের স্বামী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সামরিক আইন জারির অভিযোগে মামলা চলমান আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এমনকি মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেতে পারেন ইউন।

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউন সুক ইওল।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ায় সাবেক কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক না হলেও, কারাবাসের ঘটনা ইউনের ক্ষেত্রেই প্রথম। এছাড়া, দেশটির ইতিহাসে কখনও সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ফার্স্ট লেডি উভয়েরই গ্রেফতার হওয়ার রেকর্ড নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com